julymassacrearchive.org

শহীদ জামশেদুর রহমান

শিক্ষার্থী,

কুমিল্লা সরকারি কলেজের, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ,

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ

মৃত্যু তারিখ: ৫ আগস্ট, ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকেই সক্রিয় ছিলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জামশেদুর রহমান (২২)। তবে গত ৫ আগস্ট বিজয় মিছিলে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। উপজেলার ফেলনা এলাকার বাসিন্দা শাহ জালালের ছেলে জামশেদ। তিনিই হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চৌদ্দগ্রামের প্রথম শহীদ। তাঁর হত্যার বিচার চায় পরিবার।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার অংশে হাজার হাজার জনতার সঙ্গে জামশেদও নেমে পড়েন। ছাত্র-জনতার মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। সেদিন বিকেলে বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন জামশেদ। এর আগে প্রতিদিন সহপাঠীদের নিয়ে শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিতেন কুমিল্লা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্র। 

জামশেদের মা সালেহা বেগম বলেন, ‘প্রতিদিনই আমার ছেলে শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেত। নিষেধ করলেও শুনত না। ৫ আগস্ট সকালে আমার ছেলে তালের পিঠা খেতে চাইছিল। আমি বানিয়ে দিয়েছি। দুপুরে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় জোর করে গরম ভাত খাইয়ে দিয়েছি। এটাই [কল্পনা করতে পারিনি। আমার বুক যারা খালি করছে, আমি তাদের বিচার চাই।’ 

নিহত জামশেদের ভাই জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। ভাইয়ের নিহতের ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শিগগির মামলা করা হবে।’ 

নিহত জামশেদের বাবা শাহ জালাল বলেন, ‘আমার তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে জাহিদুর রহমান মাস্টার্স করেছে। মেজ ছেলে খালেদ মাহমুদ জিসান ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার আর ছোট ছেলে জামশেদ। আমার ছেলেরা ছাত্রলীগ, যুবলীগ বা আওয়ামী লীগের রাজনীতি না করার কারণে কোথাও চাকরি পায়নি। বড় ছেলে বাড়িতে বেকার অবস্থায় আছে। মেজ ছেলে চাকরি না পেয়ে বিদেশে চলে গেছে। ছোট ছেলে সব সময় বলত, স্বৈরাচার সরকার পরিবর্তন হলে আমি সরকারি চাকরি করব, বাবা। আমার ছেলের স্বপ্নপূরণ আর হলো না।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানান, ‘কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে দুজন শহীদ হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন ঢাকায় ও শিক্ষার্থী জামশেদ চৌদ্দগ্রামে শহীদ হন। আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে পরিবারের খোঁজখবর নিয়েছি। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়েছি। তাদের সহযোগিতার বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা বা বরাদ্দ এলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *