julymassacrearchive.org

শহীদ মো: তাহীদুল ইসলাম

শিক্ষার্থী

ইসলামের ইতিহাস বিভাগ

বরিশাল বিএম কলেজ 

মৃত্যু তারিখ :৪ আগস্ট, ২০২৪

পিতা: মো:মান্নান সরকার

রাজধানী ফার্মগেটে আন্দোলনরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন ২২ বছর বয়সি মো. তাহীদুল ইসলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু নিবন্ধন করা হলে তাওহীদুলের ভগ্নীপতি খোকন সরদার লাশ বুঝে নেন।

খোকন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘লাশ নেওয়ার পর ছাত্র-জনতা আমাকে সাথে নিয়ে প্রথমে শহীদ মিনার, পরে রাজু ভাস্কর্য ও শাহবাগে নিয়ে যায়। এ সময় সাথে আরও তিনটি লাশ ছিল। তারা মিছিল নিয়ে শাহবাগে পৌঁছানোর পর পুলিশের গোলাগুলিতে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন থেকে আর তাহীদুলের দেহ খুঁজে পাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটের দিকে গোলাগুলির পর আমরা বারডেম হাসপাতালে আশ্রয় নিলে দেখতে পাই লাশ চারটি পুলিশ তাদের গাড়িতে তুলে নিয়েছে। পরে সাতটার দিকে শাহবাগ থানায় যোগাযোগ করা হলে আমাদের জানানো হয় যে সব লাশ ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখানে জানানো হয় তাহীদুলের লাশ এখানে পুনরায় নিয়ে আসা হয়নি।’

বরিশাল বিএম কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র তাহীদুল রাজধানীর মহাখালী ডিওএইএসে একটি কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠানে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে থাকতেন শ্যাওড়াপাড়ার আনন্দবাজারে।

তাহিদুলের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বানাড়ীপাড়া উপজেলার ৪ নং চাখার ইউনিয়নের ১ নম্বর বড় চাওলাকাঠী গ্রামে। ২০২২ সালে তিনি ঢাকার সরকারি কবি নজরুল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন।

তাহীদুলের বন্ধু বরিশাল চাখারের সরকারি ফজলুল হক কলেজের শিক্ষার্থী ইনজামুল হক বলেন, ‘ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাহীদুলের সঙ্গীরা আমাকে ফোন দেয়। তারা তাকে রিকশায় করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। আমি শ্যাওড়াপাড়া থেকে মেডিকেলে গিয়ে দেখি তাকে মৃত ঘোষণা করে শরীরে পরিচয়-সংবলিত কাগজ লাগানো হয়। তাহীদুলের ভগ্নিপতি ও আমি লাশ বুঝে নেওয়ার পর আন্দোলনকারীদের একটি অংশ আমাদেরকে শহীদ মিনার পর্যন্ত যেতে বলে।’

ইনজামুল আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে তারা আমাদের রাজু ভাস্কর্য ও শাহবাগে নিয়ে যায়। এরপর পুলিশের হামলার মুখে আমরা লাশ ছেড়ে বারডেম ভবনে লুকিয়ে পড়ি। এ সময় সঙ্গে আরও তিনটি লাশ ছিলো। তাদের সবাইকে পুলিশের গাড়িতে নিতে দেখি। পরে শাহবাগ থানা ও ঢাকা মেডিকেলে খোঁজ নিয়েও তাহিদুলের দেহের হদিস মেলেনি।’

আজ সকাল ১০টায় তাহীদুলের বন্ধু ইনজামুল হক টিবিএসকে বলেন, ‘গতকাল রাত ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলের হাসপাতাল ও কলেজ মর্গ এবং শাহবাগ থানাসহ কয়েক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পাইনি। এখন আবার শাহবাগ থানায় এসেছি। বুঝতে পারছি না তাহীদুলকে কীভাবে খুঁজে পাব।’

গতকাল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ টিবিএসকে জানায়, তাহীদুলকে বিকেলে মৃত ঘোষণার পর স্বজনদের সাথসঙ্গে কিছু উত্তেজিত মানুষ লাশ নিয়ে যায়। এরপর এই লাশ এখানে আসেনি।

খোকন সরদার বলেন, ‘তাহিদুলের পরিবার থেকে অসংখ্যবার ফোন আসলেও আমি সদুত্তর দিতে পারছি না। আমি এখন দিশেহারা অবস্থায় কী করব বুঝতে পারছি না।’

তথ্যসূত্র: দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top