julymassacrearchive.org

শহীদ হাফেজ মো: জসিম উদ্দিন

চাকুরিজীবী

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়

মৃত্যু তারিখ : ১৯ জুলাই, ২০২৪

পিতা: আ: মান্নান হাওলাদার

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বরিশালের বানারীপাড়ার পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের হাফেজ মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন (৩৫)। এরপর দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও শহীদ পরিবারে এখনো চলছে শোকের মাতম। থামছে না শহীদ জসিমের অসুস্থ বৃদ্ধ মা মেহেরুন্নেছা বেগম, স্ত্রী সুমি ও পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে জান্নাতের আর্তনাদ। আধো আধো বুলিতে দেড় বছর বয়সী শিশুপুত্র সাইফ সবার মাঝে খুঁজে ফিরছে তার বাবাকে।

বাবার ছবি বুকে চেপে ধরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়ে জান্নাত বলে, ‘ছুটি নিয়ে ঢাকা থেকে বাবা বাড়িতে এলে তাদের দুই ভাই-বোনের জন্য খেলনা, খাবার ও পোশাক নিয়ে আসতেন। আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরতেন। সেই প্রিয় বাবা আর কোনো দিন আসবে না, আদর করে বুকে জড়িয়ে ধরবে না। কাকে বাবা বলে ডাকব আমরা।

এদিকে স্বামীকে হারিয়ে পাগলপ্রায় স্ত্রী সুমি বেগম। দুই চোখে তাঁর ঘোর অন্ধকার। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি জানান, স্বামীই ছিল তাঁর একমাত্র অবলম্বন। নোয়াখালীতে তাঁর বাবার বাড়ির অবস্থাও ভালো না।

এখন কিভাবে সন্তানদের বড় করবেন, কিভাবে সংসারের বোঝা টানবেন—সেই চিন্তায়ও বিভোর তিনি।

গত ১৯ জুলাই ঢাকার উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে বেষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান হাফেজ মাওলানা জসিম উদ্দিন। ওই দিন রাতেই বানারীপাড়ার পূর্ব সলিয়াবাকপুর গ্রামের বাড়িতে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয় তাঁকে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান হাওলাদের ছেলে।

প্রায় ১৫ বছর ধরে ঢাকায় থাকতেন জসিম। উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে একটি ওয়ার্কশপে চাকরি করতেন। ঘটনার দিন ৭ নম্বর সেক্টরে ফরহাদ অটো পার্টসের দোকানে যান মাইক্রোবাসের পার্টস কিনতে। সেখান থেকে ফেরার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান জসিম। বৃদ্ধা অসুস্থ মাকে দেখভাল করতে স্ত্রী ও সন্তানদের গ্রামের বাড়িতে রেখেছিলেন তিনি।

তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top